বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
জিয়া শিশু কিশোর মেলার মতবিনিময় সভা বরিশালে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার মনিটরিং করলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ দেলোয়ার হোসেন নিম্নচাপের কারনে বঙ্গোপসাগর উত্তাল, পায়রা বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত সরকারকে বলবো, সব রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন বরিশালে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৪ উপলক্ষে সাইকেল রেলী অনুষ্ঠিত বরিশাল মহানগর যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় সরকারি এম বি কলেজ মাঠ উন্মুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে সংরক্ষিত বনের বালু উত্তোলন, হুমকিতে সবুজ বেষ্টনী বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, উপকূলে গুমট পরিবেশ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রাস্তা সহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন এলজিইডির টিম বাউফল নারীর বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে ৮দিনের অভিযানে ১৯ জেলে আটক, প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মিটার জাল জব্দ বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদ বরিশাল মহানগরীর প্রতিনিধি সমাবেশ কলাপাড়ায় নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক লাখ টাকা জরিমানা কুয়াকাটা পৌর বিএনপির অফিস ভাংচুর মামালায়, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সহ ৪ জন জেল হাজতে
উত্তরপত্র জালিয়াতি: বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ১০ ত্রুটি চিহ্নিত

উত্তরপত্র জালিয়াতি: বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ১০ ত্রুটি চিহ্নিত

Sharing is caring!

এইচএসসির উত্তরপত্র জালিয়াতির সাথে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অর্ধডজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জড়িত রয়েছেন। এছাড়া উত্তরপত্র ব্যবস্থাপনায় অবহেলা ও উদাসীনতার জন্য ১০টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (বরিশাল) পরিচালক অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন এমনই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের কাছে। দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ ইউনুস বলেন, বোর্ডের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং কাজ কর্মে শৃঙ্খলা ফেরাতে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সব দপ্তরে রদবদল করে ঢেলে সাজানো হবে। তদন্ত কমিটির প্রধান তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হয়ে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হলে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা কঠিন হয়ে পরবে।

অপরদিকে উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনার কিনারা করতে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোঃ আনোয়ারুল আজিম বাদি হয়ে বিমানবন্দর থানায় যে মামলা দায়ের করেছিলেন, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন বরিশাল সিআইডির পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জামান। তিনি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন।

শিক্ষা বোর্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এইসএসসি পরীক্ষার উচ্চতর গণিতে ১৮টি উত্তরপত্র জালিয়াতির সাথে ১৮ শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্য যারা জড়িত রয়েছেন তারা সবাই বরিশাল বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এদের মধ্যে দু’জন আছেন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা। অন্যরা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। সূত্রমতে, তদন্ত প্রতিবেদনে জালিয়াতির সাথে বোর্ডের যারা সংশ্লিষ্ট তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ঘটনার শুরুতে চিহ্নিত জালিয়াতচক্রের অন্যতম বোর্ডের উত্তরপত্র শাখার বরখাস্ত হওয়া অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পালের বক্তব্য তদন্ত কমিটি গ্রহণ করতে না পারায় অন্য কারা জড়িত সে ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। অভিযোগ উঠেছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরপরই দুইজন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ১৫দিনের ছুটি নিয়েছেন। ওই দুইজন কর্মকর্তা জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছেন এমন গুঞ্জন উঠেছে বোর্ডের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে।

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বোর্ডের ৪/৫জন কর্মকর্তাসহ পরীক্ষা শাখার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। তবে পরীক্ষা শাখা তথা উত্তরপত্র শাখার বরখাস্ত হওয়া উচ্চমান সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পালের নাগাল পায়নি তদন্ত কর্তৃপক্ষ। উচ্চতর গণিত বিষয়ের উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ার পরপরই গত ৮ আগস্ট গোবিন্দ চন্দ্র পালকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে গোবিন্দ পলাতক রয়েছে।

অপরদিকে সংশ্লিষ্ট ১৮ পরীক্ষার্থীকে তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দেয়ার জন্য বলা হলেও তাদের মধ্যে একজন পরীক্ষার্থী এবং ১৩ জন অভিভাবক নিজেদের নির্দোষ দাবি করে তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দিয়েছেন।

এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জড়িত থাকার বিষয়টি ছাড়াও ১০টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-বোর্ডের গোপনীয় শাখা, পরীক্ষা শাখাসহ গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলোতে একই ব্যক্তি একই পদে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করা, উত্তরপত্র কক্ষে সিসি ক্যামেরা না থাকা, জনবল সংকট, তদারকির অভাব ইত্যাদি। সূত্র জানায়, বরখাস্ত হওয়া উচ্চমান সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পাল ২০ বছর ধরে পরীক্ষা শাখায় কর্মরত ছিলেন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় এ বছরের ১৭ জুলাই। তবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতের (প্রথম পত্র) উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনায় ১৮ পরীক্ষার্থীর ফল স্থগিত রাখে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পরে বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশে ওই পরীক্ষার্থীদের চলতি বছরের ফলাফল বাতিল এবং পরবর্তী তিন বছরের জন্য তাদের পরীক্ষার সুযোগ থেকে বহিস্কার করা হয়। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় উত্তরপত্র শাখার অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পালকে।

জালিয়াতির সাথে আর কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে গত ১৮ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (বরিশাল) অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যর কমিটি গঠণ করা হয়েছিল।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD